সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: রিজভী নির্বাচন কবে, সেই ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই : প্রেস উইং মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু
খোলাবাজারে ডলার ছুঁয়েছে ১২০ টাকা

খোলাবাজারে ডলার ছুঁয়েছে ১২০ টাকা

ডেস্ক নিউজ: দেশে ডলারের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। লাগামহীনভাবে বাড়ছে বৈদেশিক এ মুদ্রার দাম। এর বিপরীতে কমছে টাকার মান। নানা পদক্ষেপ নিয়েও দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে খোলা বাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা। যেখানে গত সপ্তাহে এক ডলার ছিল ১১৭-১১৮ টাকা। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খুচরা ডলারের দাম ১১৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।

বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ডলার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ মানি চেঞ্জারের কাছে ডলার নেই। যাদের কাছে আছে তারাও সরাসরি ডলার বিক্রি করছেন না। পরিচিত কারও মাধ্যমে ডলার বিক্রি করছেন। প্রতি ডলারে রেট নিচ্ছেন ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা। অর্থাৎ নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২০ টাকা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব শেখ হেলাল সিকদার  বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি চেঞ্জারগুলোর ডলারের দাম বেঁধে দিয়েছে। এক্ষেত্রে কেনার রেট ১১১ টাকা ৮০ পয়সা এবং বিক্রির রেট ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা। এ দামে কেউ ডলার পাচ্ছে না, তাই মানি চেঞ্জারগুলো এখন শূন্য হাতে বসে আছে।

তিনি জানান, মানি চেঞ্জারগুলো ফাঁকা থাকলেও ট্রাভেল এজেন্সি ও ফুটপাতে ডলার বিক্রি হচ্ছে। কারণ, তাদের কারো কাছে হিসাব দিতে হয় না। তাদের কাছে ডলারের অভাব নেই। দাম বেশি পাওয়ায় গ্রাহকও এখন বিভিন্ন এজেন্সির কাছে ডলার বিক্রি করছে। এজেন্সিগুলোও ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। আজ শুনছি এজেন্সিগুলো ১১৮ টাকার উপরে ডলার বিক্রি।

এদিকে রাজধানীর মতিঝিল ও গুলশান এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মানি চেঞ্জারগুলোতে খুব একটা বেচাকেনা নেই। হাতেগোনা এক দুইটা মানি চেঞ্জারে লেনদেন হচ্ছে, তাও এর সংখ্যা খুব নগণ্য। এক কথায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। অনেকে দাবি করছেন- ডলার নেই তাই বিক্রি করতে পারছি না। কয়েকজন ডলার বিক্রেতা বলেন, বাজারে কেনাবেচা হচ্ছে, তবে কম। কারণ সবার কাছে ডলার নেই। যাদের কাছে ডলার আছে তারা কেনাবেচা করছে। যার কাছে নেই সে বিক্রি বন্ধ রাখবে এটাই স্বাভাবিক। বিক্রেতাদের দাবি, নির্ধারিত দামে তারা ডলার কিনতে পারছেন না, তাই আপাতত বিক্রিও বন্ধ রয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট শুরু হয়। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর। এরপর দুই সংগঠনের নেতারা ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ শুরু করেন।

ডলার সংকট ও বাজার স্থিতিশীলতার জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। এখন প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দাম দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। রপ্তানি বিল নগদায়নে প্রতি ডলারের বিপরীতে দাম দেওয়া হচ্ছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমদানি ও আন্তঃব্যাংক লেনদেনে দেওয়া হচ্ছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।

বাজারে ডলারের সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে ( ২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সেই রিজার্ভ এখন কমে হয়েছে ২ হাজার ৬৭৪ কোটি (২৬ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন) ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বর্তমানে ২ হাজার ৯০ কোটি (২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন) ডলার। প্রকৃত রিজার্ভ আরোও প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার কম যা প্রকাশ করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com